৩য় অর্ধায়
বিশ্ব নবীর আবির্ভাব এর সময় প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের অবস্থা
বিশ্ব নবীর আবির্ভাব জগতের ইতিহাসে এক বিশিষ্ট ঘটনা।
তার জন্মের পূর্বে আরব,পারস্য, মিশর,মিশর, ভারত, গ্রীস, রোম, ইত্যাদি রাষ্ট্রগুলোর অবস্থা ছিল অতি শোচনীয়। রোম সাম্রাজ্যের প্রজা পিরন ও শোষণ ছিল তাদের শাসনের মূলমন্ত্র। রাজতন্ত্রের ওপরই প্রতিষ্ঠিত ছিল তাদের শাসনের ভিত্তি।রোমের অধিবাসীরা ছাড়া অন্য দেশের অধিবাসীদের থাকতে হতো নাগরিক সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত। মানুষের নৈতিক জীবন ছিল একেবারে বিপর্যস্ত। দাসত্ব প্রথার গুরুভারে মানবতা ছিল দলিত।
পারস্য সাম্রাজ্যেও রাজতন্ত্রও জাতিভেদ প্রথা ছিল প্রবল। তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকত।সিংহাসন নিয়ে দলাদলি,হত্যা বিবাদ সব সময় লেগেই থাকত।
আরবের অবস্থা ছিল আরো বিপর্যস্ত। শিশুহত্যা, নারী নির্যাতন, জুলুম, হানাহানি,গ্রোত্রে গ্রোত্রে যুদ্ধ বিদ্রোহ ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।
আরব জাতির নিজস্ব কোনা কোন রাষ্ট্র ছিল না।পারস্যের অব্যাহত শাসন ছিল এই ভূ-খণ্ডের ওপর।সমাজ জীবনে তারা ছিল পর্যুদস্ত। দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করা ছিল তাদের স্বভাব বিরুদ্ধ ।শিক্ষা-দীক্ষা ও জ্ঞানচর্চার কোন ধার ধারত না।লুন্ঠন ছিল তাদের জীবিকার প্রধান অবলম্বন।ধর্ম বলতে ছিল তাদের কতগুলো মাটি ও পাথরের তৈরী মূর্তি। জুয়াখেলা,মদ্যপান, নরহত্যা ইত্যাদি পাপকাজে লিপ্ত হতে এতটুকু দ্বিধা বোধ করত না তারা।
নারী সমাজের অবস্থা ছিল আরও করুণ তারা ছিল পুরুষের ভোগ বিলাসের সামগ্রী মাত্র। নানা রকম অবৈধ অত্যাচার চলতো তাদের ওপর, তাদের কোন স্বাধীন সত্তা ছিল না।
হযরত মুহাম্মদ (সা:) -এর জন্মের প্রক্কালে পৃথিবীর অবস্থা মোটেই সুখকর ছিল না। অজ্ঞানতার অন্ধকারে পৃথিবী ছিল নিমজ্জিত। তখনকার আফ্রিকার ছবি বলতে প্রায় বর্বরতার ছবিই মানুষের চোখে ভেসে ওঠে। ইউরোপেও তখন হযরত ঈশা (আ:)- এর নামে ঈশ্বরের পুত্র বলে কলঙ্ক লেপন করেছিল।
শত্রুকে ভালোবাসা তো দূরের কথা আপন ভাইকে বদ করতেও তারা দ্বিধা বোধ করত না। তাদের মধ্যে দলাদলি, হিংসা-বিদ্দেষ এতদুর গিয়েছিল যা পশুত্বকেও হার মানাতো ।
হযরত মুসা(আ:) এর আদেশ এবং হযরত ঈসা (আঃ) এর নসিহত সবই ছিল বিলিন।
পারস্য চীন-ভারত সকল দেশের অবস্থা ছিল একই রকম।
ঠিক তখনই জরাজীর্ণ মানবতার উদ্ধার করতে আবির্ভূত হন মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সা:)
0 মন্তব্যসমূহ