আল-কুরআনের আলো

Md: Robiul islam আমি মোঃ রবিউল ইসলাম আমার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার জন্য আপনাকে স্বাগতম, আমি নিয়মিত পোষ্ট করে থাকি, আর নিয়মিত পোষ্ট-এর আপডেট পেতে এখনই আল-কুরআনের আলো �� ওয়েব পেজটি সাবস্ক্রাইব করুন ধন্যবাদ।

১ম অর্ধায় অলি আল্লাহর দরবারই আল্লাহর দরবার

লেখক : মো:রবিউল ইসলাম 

প্রিয় বন্ধুরা তোমরা যারা আমার লেখা হযরত বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (র:) এর জীবনি পড়তে পারো নাই তারা পরে নিও।কারন তাহার জীবনিতে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় তুলে ধরা হয়েছে যাহা প্রতিটা মানব জাতীর যানা প্রয়োজন।
ধন্যবাদ
                         -: ১ম অর্ধায় :-
            অলি আল্লাহর দরবারই
                  আল্লাহর দরবার

বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক,অলি,ফকির, মুহাদ্দিস কবি হলেন ইমাম হযরত জালালুদ্দিনসূয়্যূতি (রা:) সমগ্র বিশ্বে তিনি মাওলানা রুমী হিসেবে সুপরিচিত।মাওলানা রুমী তার বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ মসনবি শরীফে বলেন :-

১-اق صامان صحبات باعولیا بحتار اذ صد صالحتاتبریا

(এক সামানা সোহবতে বা আউলিয়া বেহতর আয সদ সা-লাহ্ তাআত বে-রিয়া)

অর্থ: শত বৎসরের রিয়া বিহীন (গোপন শিরক মুক্ত) ইবাদতের চাইতে আউলিয়াগনের সান্নিধ্যে (কিছু সময় ) বসা অনেক উত্তম।
২-অলি আল্লাহর দরবার আল্লাহর দরবার, কেউ যদি আল্লাহর সান্নিধ্যে বসতে চায় সে যেন অলি আল্লাহর দরবারে হাজির হয়ে  যায়।
ওলিদের দরবার, খানকাহ,ও মাজার শরীফে যাবার ব্যাপারে যারা নিষেধ করে তারা কি মাওলানা রুমির চেয়েও নিজেকে বড় আলেম ভাবেন...?

অধিকিন্তু আল্লাহর অলিদের সান্নিধ্যে যাওয়ার ও বসার নির্দেশ স্বয়ং আল্লাহই দিয়েছেন পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক বলেন :-
১=یاایوحالاذین عمانتاقلاح واقونو مااسادیقین
(ইয়া আইয়্যুহাল্লাযীনা আমানুত্তাকুল্লাহা ওয়াকুনু মা আছসাদেকিন।
অর্থ : হে ঈমানদারগন তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং অলি আল্লাহগনের সঙ্গী হয়ে যাও। (সূরা আত-তওবা,আয়াত-১১৯)
২-যে ব্যাক্তি আমার দিকে রজু হয়েছে,তার পথকে অনুসরন কর।(সূরা লোকমান আয়াত -১৫)

অলি আল্লাহ আল্লাহর বন্ধু।আল্লাহ পাক স্বীয় বান্দাদের মধ্য হতে কতিপয় সৌভাগ্যবান লোক নির্বাচন করে নেন।তারাই অলি আল্লাহ।উপরোক্ত আয়াতগুলোতে এদেরকে অনুসরন করার কথাই বলা হয়েছে।
৩-পবিত্র কুরআনে আল্লাহর অলিদের জন্য সুসংবাদ ঘোষিত হয়েছে-
 আলা ইন্না আউলিয়া আল্লাহি লা খাউফুন আলাইহিম ওয়ালাহুম ইয়াহজানুন।আল্লাজিনা আমানু ওয়া কানু ইয়াত্তাকুন।লাহুমুল বুশরা ফিল হায়াতিদ্দুনিয়া ওয়াফিল আখিরাহ লা-তাবদীলা লিকালিমাতিল্লাহ,জালিকা হুয়াল ফাউযুল আযীম।

অর্থ: নিশ্চয়ই আল্লাহর অলিদের নেই কোন ভয়,পেরেশানি অতিতের কর্মের জন্য না আছে সংসয় ভবিষ্যতের।তারা হচ্ছে সে সব ব্যাক্তি যারা ঈমান এনেছে এবং খোদাভীতি (তাকওয়া ) অবলম্বন করে।তাদের জন্য সুসংবাদ রয়েছে পার্থিব জীবনে ও পরকালে।আল্লাহর কালামের বাক্য সমূহের বানীগুলোর কোন পরিবর্তন হয়না এটাই হচ্ছে মহান সাফল্য।(সূরা ইউনুস আয়াত ৬২-৬৪)
উপরোক্ত  আয়াতগুলোতে  আউলিয়াদের মর্তবা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা যে সুসংবাদ দিয়েছেন তা আমাদের অনুসরন ও অনুকরন করা উচিৎ।অপর দিকে হাদিস পাকে হযরত আবূ হূরায়রা(রা:) হতে বর্নিত রাসূলে পাক (সা:) বলেন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন : আমার বান্দাহ নফল ইবাদতের মাধ্যমে আমার এতই নিকটবর্তী হয়ে যায়- এক পর্যায়ে আমি নিজেই তাকে ভালবাসি।আর আমি যখন কাউকে ভালবাসি তখন আমি তার কান,চোখ,হাত,পা,যার দ্বারা সে সোনে,দেখে,ধরে,চলে।এমতা অবস্থায় সে আভার কাছে কিছু চাইলে আমি অবশ্যই দান করি।
উল্লেখিত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় আউলিয়া কেরামের মর্তবা মহান আল্লাহর দরবারে কতবেশী।তাদের দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয়।তাদের সংস্পর্শে আসলে মানুষ ধন্য হয়।গুনাহগার আসলে নেককারে পরিনত হয়।আর জাহান্নামি আসলে পেয়ে যায় জান্নাতের রাস্তা।সহীহ বুখারি শরিফের একটি হাদিস প্রনিধানযোন্য  প্রনিধানযোগ্য।মহানবি (সা:) ইরশাদ করে বলেন- বনী ঈসরাইলের পাষান্ড এক খুনি,কথায় কথায় মানুষ খুন করে ফেলা যার নেশা।৯৯ জন মানুষ খুন করে একদিন মনে মনে চিন্তা করল আমি যেভাবে মানুষ মেরে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিচ্ছি,ঠিক এইভাবে আমাকেউ তো যেতে হবে।পরকালের কঠিন শাস্তির কথা ভেবে একদিন ঘর থেকে বের হয়ে পরল কোন এক অজানা মুক্তির সন্ধানে।পথি মধ্যে দেখা হলো এক লোকের সাথে।সেই লোকের নিকট ৯৯ জন মানুষ খুন করার কথা বল্ল এবং সে মুক্তির পথের সন্ধান চাইল।৯৯ জন মানুষ খুন করার কথা শুনে লোকটি চমকে উঠল আর বল্ল কেহ একটা খুন করলে জাহান্নামে যাবে আর তুমি তো ৯৯ জন মানুষ খুন করেছ।কাজেই তোমার কোন মুক্তি নেই।লোকটি তার কথা শুনে রাগান্নিত হয়ে বল্ল। একজন খুন করলেও যে শাস্তি ৯৯ জন মানুষ খুন করলেও একই শাস্তি তাই তোকে বাচিয়ে রেখে লাভ কি।এই বলেই তাহার গলায় তরবারি চালিয়ে দিয়ে ১০০ জন মানুষ খুন করল,এবং আবারো সে অনুতপ্ত হয়ে মুক্তির সন্ধানে বেরিয়ে পরল।যেতে যেতে পথিমধ্যে আরেকজন লোকের সাথে দেখা হলো এবং তাকে ১০০ জন মানুষ খুন করার কথা বিস্তারিত বর্ননা করল এবং সে ভাল পথে ফিরার জন্য কি করবে সেটাও জানতে চাইল।
লোকটি অনেক চিন্তা ভাবনা করে জবাব দিলেন - আমাদের স্রষ্টা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অনেক দয়াবান।বান্দার অপরাধ যতই বর হোকনা কেন তাহার রহমতের এক ফোটা তার চাইতে অনেক বড়।সুতরাং একাগ্রচিত্তে তওবা করলে,অনেক বড় বড় গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন।অতঃএব হতাশ হবার কোন কারন নেই।

সুতরাং তুমি সামনের দিকে চলো।কিছুদুর গেলে আল্লাহর একজন অলি (ব্যাক্তির) সাক্ষাৎ পাবে তার হাতেই তুমি তওবা করবে।একথা সোনার পর যেন তার অন্তরে এক অনাবিল সান্তির বইতে লাগল।কাল বিলম্ব না করে এগিয়ে চললো সেই অলির সন্ধানে,কিন্তু কিছুদুর যেতে না যেতেই মৃত্যূর ফেরেশতা হাজির তাহার নিকট,সামনে এক পা এগোনোর সুযোগ নেই।নিমিশেই বের হয়ে গেল তার দেহ থেকে প্রান বায়ু।নিস্তেজ দেহ টি পরে রইল মাটিতে।এদিকে দেহ হতে বিচ্ছিন্ন আত্মাকে নিয়ে ফেরেশতাদের মাঝে দেখা দিল দন্দ্ব।একদল বলে আমরা একে নিয়ে যাব জাহান্নামে কারন সে ১০০ শত খুনের আসামি।একদল বলে আমরা একে নিয়ে যাব জান্নাতে কারন সে তওবা করার জন্য বেরিয়েছে এর্ব সৎ পথে চলবে বলে।ফেরেশতাদের এই বিতর্ক মিমাংসার জন্য মহান আল্লাহ রাব্বূল আলামিন হযরত জিবরাঈল (আ:) কে পাঠালেন।হযরত জিবরাঈল (আ:) এসে অন্য একদল ফেরেশতাদেরকে নিয়ে একটি দল গঠন করল।এবং বললেন লোকটি অলি আল্লাহর দরবারে যাবার জন্য যেখান হতে রওনা দিয়েছে  সে জায়গা হতে আল্লাহর অলির দরবার কতটুকু মেপে দেখ।অতঃপর ঐ সম্পূর্ন জাইগাটুকু  দুই ভাগ করো এবং লোকটির কোন ভাগেগিয়ে মৃত্যু হয়েছে।প্রথম ভাগে মৃত্যু হলে সে জাহান্নামী আর দ্বিতীয় ভাগে মৃত্যু হলে সে জান্নাতি।ফেরেশতারা মেপে দেখলো যে লোকটি প্রথম ভাগ অতিক্রম করে দ্বিতীয় ভাগে গিয়ে এক হাত পরিমান সামনে গিয়েছে।অর্থাৎ দ্বিতীয় ভাগে মৃত্যু বরন করেছেন।হযরত জিবরাঈল (আ:) ফায়সালা দিলেন আল্লাহর এই বান্দা বেহেশতে যাবে।অতএব তার আত্মা বেহেশতের ফেরেশতাদের হাতে সৌপর্দ করা হলো।আর তারা নিয়ে গেলেন বেহেশতে।
সুতরাং হাদিস শরিফ হতে বোঝা গেল।
একশত খুনের মত এতবড় অপরাধের পরও যদি কেহ আল্লাহর ভয় অন্তরে রেখে তাওবার উদ্দেশ্যে অলিদের দরবারে যায় বা আল্লাহর রাস্তায় বের হয় তবুও মহান আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিতে পারেন।।
আরো প্রমানিত হলো পীর,আউলিয়াদের দরবারে যাবার কারনে অশেষ রহমত ও বরকত নাযিল হয়।তাই আমরা গাউসে আযম হযরত বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (র:) এর দরবারে প্রতি চন্দ্র মাসের ১০তারিখ দিবাগত রাত্রে ১১ই শরিফ পালনের উদ্দেশ্যে খানকা শরিফ গুলোতে যাই।যাতে আল্লাহ ও রাসূল (সা:) পাকের সান্নিধ্য লাভ হয়।কেননা প্রত্যেক কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল।
মাউলাপাক বলেন-
বান্দা হ্যায় ইয়ে বান্দা বা খোদা গাউসে খোদা  কা
মওলা জিন হেঁ খালেক নে কিয়া আরয ও সামা কা।।

অর্থ : গাউসে পাকের যে গোলাম (বান্দা) সে তা আল্লাহ পাকেরই বান্দা
বাস্তবিকই জ্বিনদের প্রভু এবং জমিন ও আসমানের সৃষ্টিকারক নয় কি.....?


পরবর্তী অর্ধায় 
ইসলামে আউলিয়া কেরাম,পীর ও মুরশিদ এবং তরিকতের প্রয়োজনীয়তা 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ